সন্দিহান
অন্ধকার রাত,
চারিদিকে তীব্র একটা গন্ধ।
সেই চাঁপা ফুলের গাছটা-
“গন্ধে মাতাল করে রাখতো আমায়।”
আর একটা কবিতা-
” ভালোবাসি ভালোবাসি।”
এখনো কানে বাজে আমার জানো !
আচ্ছা, সত্যিই কি ভালোবাসি ?
নাকি সে শুধুই সময়ের দাবি !
ভুলতে পারি না কেন ?
তবেকি সত্যিই নিজের মধ্যে নেই আমি !
দূরত্ব
মনে করো,
বহুদিন কথা হয়না দু’জনার,
কোনো ফোন নেই,
ডাক বাক্সেও কোনো চিঠি পরে নাই।
অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে
আমি আজ ব্যথাহীন।
তোমারও কি মনের কোণে জমবে ব্যথা?
নাকি বড্ড অভিমান করবে ?
নাকি ধূলো জমে পড়বে সেখানে !
ফেরা
আমি চাইছি তাই ফিরে এসেছি,
কিন্তু,সত্যিই কি ফিরতে পেরেছি !
চাইলেই কি ফেরা যায় ?
মানুষ মরে যায় একবার,
আর আমি মরেছি বার বার
আমি কি তবে মানুষই নই ?
তবে কেন এ মারা যাওয়া
বার বার।।
চিঠি
প্রিয় কবি,
কতদিন হয় তোমার কোনো কথাই আমার শোনা হয় না ?
কতদিন হয় তোমার চোখ এ দুটি চোখকে স্পর্শ করে না?
কতো দিন হয় এ মন তার পিপাসা মেটাতে পারে না?
বলতে পারো কি ?
আচ্ছা কবি,
এখনো কি ভোরের আলো দেখা হয় প্রতিদিন ?
সাত সকালে বাগানের সামনে দাঁড়ানো হয় ?
তির তির করে বেড়ে চলা ভোরের আলো যখন
গোধূলি বেলায় মেশে,
তার আবছায়া রং গায়ে মাখা হয় এখনো ?
অপ্রিয় আমিটায় কি এখনো বিষ ?
এখনো তীব্র অবহেলার পাত্র আমি ?
ইচ্ছা
আমার ভালোবাসা,
তুমি কি আমার প্রথম চাওয়া হবে ?
আমার একগুচ্ছো প্রেমের,
আবল তাবল কথা হবে?
ভীষণ অরণ্যে হারিয়ে যাবো দু’জন-
ছোট্ট একটা কুটির হবে আমাদের,
সন্ধ্যে হলে বসবো বারান্দাটায়
শীতল পাটি বিছিয়ে দু’জনের
রাতভর আড্ডা।
বিষাক্ত
তুমি বলছো অমৃত ধারা
আমি দেখছি চায়ের পেয়ালা,
যাতে আছে পিপাসার জল ।
তুমি বলছো ভালোবাসার প্রতীক,
আমি দেখছি লাল গোলাপ;
যা গাছেই শোভা পায়।
যাকে তুমি বলছো ভালোবাসা,
তা আমি দেখছি বিষাক্ত প্রেমলীলায় !
ভালোবাসা উন্মুক্ত,অমৃতধারা,
যা সহজেই পাওয়া যায় না,
যা তোমার মতো বিষাক্তের নয়।
স্বপ্নভঙ্গ
প্রিয়,
ভেবেছিলেম তোমায় এক সুনীল আকাশ দিবো।
তোমার যত অভিমান কষ্ট সব ভুলিয়ে দিবো ।
তোমার চলার পথে কোনো বিপদ আসলে,
তার সামনে মাথা পেতে বলব;
“আগে আমায় মোকাবিলা করো।”
তোমার সারাদিনের গ্লানি দূর করে
তোমার কপোলে চুমু এঁকে বলব
“যাও ফ্রেশ হয়ে আসো,আমি খাইয়ে দিচ্ছি।”
তুমি যখন কাজের মাঝে ডুবে থাকবে,
তখন তোমায় একটুও বিরক্ত করবোনা বরং
তোমার ঘরটা গুছিয়ে রাখবো না হয়।
তোমার ঘরের এলোমেলো হয়ে থাকা বইয়ের তাক,
সকালে ঘুম থেকে ওঠা তোমার তেল তেলে গাল,
অবেলায় করা তোমার অভিমান,
বা তোমার ভেঙে যাওয়া প্রথম প্রেমের গল্প,
যার সবটাকেই ভালোবাসতে চেয়েছিলেম ।
আপন
খুব করে চাইছি
কেউ একজন আপন হোক।
যাকে দূর দূর করে তাড়ালেও
শক্ত করে জড়িয়ে ধরবে।
যখন খুব মন কেমন করবে,
হাতটি ধরে চোখে চোখ রেখে বলবে;
” আছি তো,ভয় কিসে”।
যার শত রাগ-অভিমান
সয়ে নিতে চাইবে মন।
যার জন্য সারাদিন
প্রতীক্ষা করা যায় ।
খুব করে চাইছি
কেউ একজন হোক
শুধুই আমার।।
ভালো থেকো
ভালো থেকো প্রিয়
নীলচে আকাশ,
ভালো থেকো প্রিয়
হীমেল বাতাস,
ভালো থেকো
মুখ পোড়া শালিকের দল,
ভালো থেকো
আমার কবিতা সকল।
ভালো থেকো
না বলা কথার ঝাঁক,
ভালো থেকো
আমার একলা রাত।
ভালো থেকো
প্রিয় জায়গার হাট
যেখানে আছে “প্রিয়”
পাখিটির বাট।
ভালো থেকো,
ভালো থেকো।
গোপন
ভাবছি এক ফ্রেমে বন্দি হবো
একই নায়ে ঘুরবো !
একই রিক্সায় ঘুরবো দু’জন
ভাবছি,
তোমায় আমার আকাশ বানাবো।।
সে আকাশের বিশালতায় হারাবো দু’জন,
পাখি হয়ে উড়বো না হয় !
চাঁপা ফুলের গাছটায় বসবো মাঝে মাঝে,
আর সারা গায়ে গন্ধ মাখবো ।
না হয় হলাম চড়ুই পাখি,
তাল গাছটায় বাসা বাধবো ।
হবে আমার ;
একান্ত আমার ।
কবি পরিচিতি:
বৃষ্টি বসাক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ