পীর-আওলিয়ার দেশ
আমাদের এ দেশ খোদাতা‘লার দান, শত নেয়ামতে পূর্ণ তার,
সোনার মাটি মিঠাজল নদী, ফুল-ফসল আর ফলের আধার।
সোনার মাটির উপরে শোভিছে নয়নাভিরাম ছবির গ্রাম,
সেই মাটিরই তলদেশে আছে ঘুমিয়ে শতেক আওলিয়া প্রাণ।
চার কোণে তার শুয়ে আছে চারি আলোর দিশারী মহাপুরুষ,
তাঁদের মাঝে সারা দেশময় আছে যে কত মনিষী-কুশ।
উত্তরে জ্বলে শাহজালালের জালালী আলোর আলোমশাল,
তাঁরই পাশে আছে শাহ পরান, সে গরম পীরের তেজ বিশাল।
দক্ষিণে আছে ব্যাঘ্র হৃদয় খান জাহান আলী অতন্দ্র পীর,
সারা কোণ জুড়ি ছড়িয়ে রয়েছে কতশত তাঁর শিষ্য বীর।
পুবকোণে শুয়ে আওলিয়া তাজ সুফী বায়েজিদ বোস্তামী,
সারা কোণটুকু আগলে রেখেছে শাহ আমানত দোস্তামী।
পশ্চিমে আছে ইসমাইল গাজী পদ্মপারের শাহ মাখদুম,
শাহ তুরকান শহীদ রয়েছে শাহ ইসমাইল গাজী নির্ঘুম।
চারকোণ শেষে মাঝখানে আছে কত আওলিয়া পীর শায়েখীন,
দিবস রজনী নির্ঘুম ঘুমে দিতেছে পাহারা অন্তহীন।
শাহ সুলতান বলখী হেরিছে বগুড়ার গড় মহেস্থান,
শেরপুর জুড়ে রয়েছে যে শের অসীম সাহসী শাহ তুরকান।
নেত্রকোনার সুলতান রুমীর নেত্রে আরশী নূর,
সাইয়েদ শাহ নাসিরুদ্দিন দেখে হবিগন্জ পুর।
রূহানী ফয়েজে গৌড় গড়েছে শাহ জালাল তাবরিজী,
শেখ আলাউল হক তাঁর সনে আছে ইসমাইল খাঁ গাজী।
মাখদুম শা-দৌলা চরনে দুলেছে পাবনা শা-জাদপুর,
ফরিদুদ্দিন শাইখ জ্বেলেছে তাওহীদি আলো ফরিদপুর।
বাবা আদম শহীদ ঘুমিয়ে মুন্সিগন্জ বা বিক্রমপুর,
শরীয়তপুরে শরীয়ত এনেছে জান শরীফ শাহ সুরেশ্বর।
চিটাগাংয়ের গাঙ জুড়ে আছে বদরুদ্দীন শাহ মাদার,
চিরপূজনীয় জেহাদী শাইখ কল্লা শহীদ কুমিল্লার।
পীর ইয়েমানী নিয়ামতুল্লা আলী বাগদাদী ঢাকার প্রাণ,
আদালত মাঠে শরফুদ্দীন ন্যায়দন্ডের দেয় বিধান।
বংগভবনে জামাল ডাকিনি মাটির নীচে সে গুলিস্তান,
গোলাপ শাহের বিচরণ সেথা শুনিবে জিকির পাতিলে কান।
সোনার গাঁওয়ের গাঁওটি সোনার সোনার মানুষে ভরা,
শাহ লংগর আবু তাওয়ামার রূহানী আলোতে গড়া।
শেখ মুহাম্মদ ইউসুফ সেথা সোনা বিছায়েছে কতো
শরফুদ্দীন মানেরী জ্বেলেছে সোনার প্রদীপ শত।
কতশত নামে পরিচিত ধামে মাটির নীচেতে রয়েছে থির,
সত্য, গাজী, মানিক, সোনা, জংলী, আয়না, বদর পীর।
এই বাংলার নীচেয় রয়েছে অমর পীরের মহাস্থান,
শতযুগ ধরি এই বাংলায় জ্বলিছে তাঁদের রোশনী প্রাণ।
কবি পরিচিতি:
প্রফেসর মু. মনিরুজ্জামান
আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
মালয়েশিয়া