Islam and Nationalism: Muhammad Iqbal
মওলানা হােসায়েন আহমদের বিরতির ভিতরে যে অনিষ্ট আত্ম- গােপন করে আছে তা ঘনিষ্টভাবে পর্যালোচনা করে দেখা প্রয়োজন। সুতরাং আমি আশা পােষণ করি যে, পাঠকরা নীচের কয়েকটি পঙক্তি যত্ন সহকারে পাঠ করবেন। মওলনা হােসায়েন আহমদ একজন শিক্ষিত আলিম, সুতরাং উম্মতে মোহাম্মদীর সামনে তিনি যে মতবাদ পেশ করেছেন তার বিপজ্জনক পরিণাম তাঁর অজানা থাকবার কথা নয়।
তিনি ‘কওম’ অথবা ‘মিল্লাত’ যে শব্দই ব্যবহার করুন না কেন সে প্রশ্ন এখানো অপ্রাসঙ্গিক। যেখানে একটি শব্দ ব্যবহার করে উম্মতে মোহাম্মদী নিয়েই গঠিত একটি দলকে বুঝানো হয় সেখানে তাঁর মতবাদ অনুযায়ী সেই দলের বুনিয়াদ হিসাবে দেশকে ধরে নেওয়া দুঃখজনক ও দু্র্ভাগ্যসূচক। তাঁর বিরতি থেকেই বুঝা যায় যে, তাঁর ভ্রান্তি সম্পর্কে তিনি সচেতন কিন্তু তাঁর চেতনার অনুভূতি এতটা এগোয়নি যা তাঁকে তার স্বাীকৃতি বা সংশোধনের দিকে চালিত করতে পারে। নিছক শাব্দিক অথবা ভাষাতাত্ত্বিক যুত্তি দিয়ে কেবল কথার মারপ্যাঁচই দেওয়া যেতে পার। ‘মিল্লাত’ ও ‘কওম’ শব্দ দু’টির ভাষাতাত্ত্বিক বৈষম্য পেশ করে সমস্যার কোনো সমাধান হয় না। দ্বীন ইসলামের সত্যসমূহের সাথে যাদের কোনো পরিচয় নেই এ বৈষম্য আবিষ্কার ক’রে কেবল তারাই খুশী থাকতে পারে। নিশ্চিতরূপে এ বিবৃতি কোন
ওয়াকিফহাল মানুষকে প্রতারিত করতে পারে না।
মওলানা বুঝে উঠতে পারেননি যে, মুসলিম সমাজের সামনে যে ব্যাখ্যা তিনি পেশ করেছেন তার ফলে তাদের মধ্যে দুটি ভ্রান্তি ও বিপজ্জনক ধারণা সৃষ্টি হচ্ছে।
প্রথমতঃ “মিল্লাত’ হিসাবে মুসলমানরা যে মর্যাদার দাবীদার জাতি হিসাবে তারা তা’ থেকে অলাদা কিছু হতে পারে।
দ্বিতীয়তঃ জাতি হিসাবে তারা যখন ভারতীয় হয়ে পড়েছে তথন ধর্মবিশ্বাসকে দূরে ঠেলে দিয়ে অপর ভারতীয় জাতিসমূহের জাতীয়তায় অথবা ভারতীয়বাদে(Indianism) তাদের সত্তা বিলুপ্ত করে দেওয়া উচিত। এ হচ্ছে ‘কওম’ ও ‘মিল্লাত’ নিয়ে শুধু কথার মারপ্যাঁচ।
অন্যথায় এ মতবাদ হচ্ছে উপরে বণিত একই মতবাদ, যা এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায় ও তাদের নেতৃবৃন্দ প্রতিদিন ভারতীয় মুসলমানকে স্বীকার করে নিতে প্ররোচিত করছে ।মতবাদটি হচ্ছে এই যে ,ধর্ম ও রাজনীতি সম্পূর্ণরূপে স্বতন্ত্র এবং
মুসলমানরা যদি এদেশে বাস করতে চায় তাহলে ধর্মকে নিছক ঘরোয়া ব্যাপার (private affair) বলে তাদেরকে মেনে নিতেই হবে এবং তাকে কেবল ব্যক্তিগত জীবনেই সীমাবদ্ধ করতে হবে। রাজনীতির ক্ষেত্রে তারা নিজেদেরকে স্বতন্ত্র জাতি মনে করবে না, বরং তারা সংখ্যাগরিষ্ঠিদের মধ্যেই আত্মবিলোপ করবে।
তাঁর বত্তব্যে তিনি ‘মিল্লাত’ শব্দটি ব্যবহার করেননি বলে মওলনা যেন বুঝাতে চাচ্ছেন যে, তিনি মিল্লাতকে জাতির চাইতে বড়ো কিছু মনে করেন।
তিনি বলেনঃ দুটি শব্দের মধ্যে রয়েছে দুনিয়ার ব্যবধান এবং জাতিকে (nation) যদি তুলনা করা যায় যমিনের সাথে তাহ’লে ‘মিল্লাত’ হচ্ছে আসমানের মতো। দেশের মধ্যে এবং প্রকৃতপক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠদের মধ্যে নিজস্ব সত্তা লোপ করার এবং জাতিকে আসমানের মর্যাদা দেবার ও তার ফলে ইসলাম যে যমিনের মর্যাদায় নেমে যাবে সে সত্যটি উপেক্ষা করার মতবাদ আট কোটি মুসলমানের কাছে প্রচার করে তিনি আবশ্যি বাস্তব ক্ষেত্রে ‘মিল্লাতের’ জন্য কোনো স্থানই অবশিষ্ট রাখেননি।
আমি ‘কওম’ ও মিল্লাত’ শব্দ দুটির তাৎপর্য সম্পর্কে আবহিত নই এবং কবিতাটি লেখার আগে আমি মওলানার বক্তৃতার সংবাদপত্রে প্রকাশিত বিবরণ পরীক্ষা করে দেখিনি ও ‘কামুস’ পর্যালোচনা করিনি, এই অনুমানের বুনিয়াদে মওলানা আামার বিরুদ্ধে আরবী ভাষায় অনভিজ্ঞতার অভিযোগ এনেছেন। অভিযোগটিকে আমি সাদরে অভিনন্দিত করি। অমার জন্য না হলেও অন্ততঃ মুসলিম সম্প্রদায়ের খাতিরে যদি মওলনা ক্বামুস ছাড়িয়ে কোরআন শরীফ পালোচনা করতেন এবং এই বিপজ্জনক ও ইসলামবিরোধী মতবাদ মুসলমনিদের সামনে পেশ করার আগে আল্লাহ তা’আলার প্রেরিত বাণীর সাথে যোগাযােগ করতেন তাহলে অবশ্যি আরাে ভালো হ’ত। আমি শিক্ষিত আলিম অথবা আরবী সাহিত্যের সমঝদার সাহিত্যরসিক নই- এ কথা আমি স্বীকার করি ।
“কলন্দর জানে না আর কিছুই
‘লা-ইলাহা’র দুটি হরফ ব্যতীত,
ওই দেখাে শহরের ধর্মতাত্ত্বিক (ফকীহ),
ক্বারুণ সে হিজাযী শব্দ-সম্ভারের ।”
কিন্তু মওলানা কেবল ‘কামুস’ নিয়েই খুশী হলেন কেন? কওম শব্দটি কি শত শতবার কুরআন শরীফে ব্যবহার করা হয়নি? মিল্লাত শব্দটি কি বারংবার কুরআন শরীফে আসেনি? কুরআনের আয়াতসমূহে ‘কওম’ ও
‘মিল্লাত’ বলতে কি বুঝায় ? নবী করীম (দঃ)-এর অনুসারীদেরকে বুঝাবার জন্য এ দুটি শব্দ ছাড়া ‘উম্মত’ শব্দটি কি ব্যবহার করা হয়নি ?
এসব শব্দ কি অর্থের দিক দিয়ে এতটা বৈষম্যমূলক যে, পার্থক্যহেতু একটা বিশেষ জাতির বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য থাকবে, যার ফলে ধর্ম ও কানুন সংক্রান্ত ব্যাপারে তারা ঐশী বিধান মেনে চলবে এবং জাতীয়তার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে অনুসরণ করবে ধর্মীয় পদ্ধতির বিরোধী একটি পদ্ধতি ?
মওলানা যদি কুরআন শরীফ থেকে প্রমাণ সংগ্রহের প্রয়াস পেতন তাহলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস, সমস্যার সমাধান তাঁর কাছে স্বতঃই ধরা পড়তাে। মওলানা শব্দগুলির যে ভাষাতাত্ত্বিক তাৎপর্য দিয়েছেন তা অনেকখানি নির্ভুল ।
শব্দগত তাৎপর্যের দিক দিয়ে ‘কওম’ বলতে বুঝায় “একটি জনসমষ্টি, নারীরা যার শামিল নয়।” তাহ’লে, ভাষাতত্ত্বের দিক দিয়ে নারীরা ‘কওমের’ অন্তর্ভুক্ত হয় না। কিন্তু একথা সুস্পষ্ট যে, কুরআন শরীফে যেখানে মুসার কওম ও আদ কওমের উল্লেখ করা হয়েছে সেখানে নারীকেও কওমের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে । ‘মিল্লাত’ বলতেও বুঝায় ধর্ম ও কানুন। কিন্তু প্রশ্নটি কেবল শব্দ দু’টির আভিধানিক অর্থের পার্থক্য নিয়ে নয়।
আসল প্রশ্ন হচ্ছে এইঃ
প্রথমতঃ মুসলমানরা সামগ্রিকভাবে আল্লাহর একত্ব (তওহীদ) ও খতমে নবুয়তের বুনিয়াদের ওপর প্রতিষ্ঠিত একটি একক, ঐক্যবদ্ধ ও সুনির্দিষ্ট দল কি-না অথবা তারা এমন একটি দল কি-না, যারা গোষ্ঠী, জাতি ও বর্ণের চাহিদা মিটাবার জন্য তাদের ধর্মীয় ঐক্য বর্জন করে ভিন্ন পদ্ধতি ও কানুনের ভিত্তিযুক্ত অপর কোনো সমাজ বিধান অবলম্বন করবে।
দ্বিতীয়তঃ কুরআন কোথাও এই ধারণা প্রকাশের জন্য ‘কওম’ শব্দটি প্রয়োগ করেছেন কি? না, তাতে কেবল ‘উম্মত’ অথবা “মিল্লাতই” ব্যবহার করা হয়েছে? কুরআনের কোনো আয়াতে কি বলা হয়েছেঃ ‘হে মানবগণ’ অথবা ‘হে বিশ্বাসিগণ’, মুসলিম কওমে যুক্ত হও অথবা তার অনুসরণ করো, না মিল্লাত অনুসরণ করবার ও উম্মতে যুক্ত হবার জন্য সে আহ্বান?
আমি যতাটা উপলব্ধি করতে পেরেছি তাতে যেখানেই কুরআন শরীফে মানবকে মুসলিম দলের অনুসরণ করার ও তাতে যুক্ত হবার আমন্ত্রণ জানানাে হয়েছে সেখানেই মিল্লাত অথবা উম্মত শব্দতি ব্যবহার করা হয়েছে। কোন বিশেষ জাতিকে অনুসরণ করবার অথবা তার সাথে যুক্ত হবার আহ্বান নেই কোথাও। দৃষ্টান্তস্বরূপ, কুরআন মজীদে বলা হয়েছেঃ
“জীবন-বিধানের দিক দিয়ে কে তাঁর চাইতে শ্রেষ্ঠ যিনি তাঁর সকল উদ্দেশ্যকে আল্লাহর কাছে সমর্পণ করে দেন, (মানবের) কল্যাণ বিধান করেন এবং ন্যায়নিষ্ঠ ইবরাহিমের মিল্লতকে অনুসরণ করেন? “(৪ঃ ১২৫)
এখানে রয়েছে ‘মিল্লাতকে মেনে নেবার ও অনুসরণ করবার আহ্বান ; কারণ মিল্লাত বলতে বুঝায় একটি ধর্মবিধান, একটি কানুন ও একটি কর্মসূচী। যেহেতু ‘কওম’ বলতে কোনো কানুন বা ধর্ম বিধান বুঝায় না, তাই তাকে অনুসরণ করবার ও তার প্রতি আনুগত্য স্বীকার করবার আহ্বানেরও কোনো অর্থ হতে পারে না। একটি মানব-সমষ্টি (group )–একটি গোষ্ঠী অথবা বংশ, একটি ডাকাত দল অথবা ব্যবসায়ীদের সমাবেশ, ভৌগোলিক ইউনিট হিসাবে শহরের বাসিন্দা অথবা পল্পীবাসী জনসমষ্টি , যা-ই হােক না কেন তারা হচ্ছে নিছক পুরুষদের অথবা পুরুষ-নারী উভয়ের মিলিত জনসমষ্টি ।ঐশী পয়গাম ও নবীর দৃষ্টিভঙ্গিতে সে জনসমষ্টি তখনাে হেদায়াত-প্রাপ্ত নয়। যদি এরূপ জনসমষ্টির মধ্যেই কোনো নবীর কাছে আল্পাহর পয়গাম নাযিল হয় তা হলে তা প্রথমে পেশ করা হবে তারই (সেই জনসমষ্টির) কাছে এবং সেই কারণেই তা তার সাথে যুক্ত হয়—যেমন হযরত নূহের (আঃ) কওম, হযরত মূসার (আঃ) কওম ও হযরত লুতের (আঃ) কওম। পক্ষান্তরে এই দল যদি কোনো নবীর অনুসরণ না করে কোনো রাজা বা নেতার অনুসরণ করে তা হলে সে-ক্ষেত্রেও একই নীতি প্রযোজ্য; যেমন আদ কওম, ফেরাউনের কওম। দু’টি দল যদি একই দেশে বাস করতে থাকে এবং তারা পরস্পরবিরোধী নেতার অনুসরণ করে তথনো তারা উভয় নেতার নামের সাথে যুক্ত হতে পারে। দৃটান্তস্বরূপ, হযরত মূসার (আঃ) কওম ফেরাউনের কওমের পাশাপাশি বাস করতোেঃ
“ফেরাউনের কওমের প্রধানরা বললোঃ (হে রাজন) যমিনের উপর মূসা ও তাঁর কওমের কৃত অনিষ্ট আপনি বরদাশ্ত করবেন কি ? (৭:১১)
কিন্ত ‘কওম’ শব্দটি যেখানেই ব্যবহার করা হয় তাতে এমন দল বুঝায়, যাতে যারা হেদায়াত পেয়েছে ও যারা হেদায়াত পায় নাই উভয়কেই অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
যারা নবীকে অনুসরণ করেছে, আল্লাহর একত্ব স্বীকার করে নিয়েছে তারাই হয়েছে নবীর মিল্লাতের ও তার প্রচারিত ধর্মের অপরিহার্য অংশ। আরো সোজা কথায় বলতে গেলে তারাই হচ্ছে মুসলিম। একথাও অবশ্য মনে রাথতে হবে যে, অবিশ্বাসীদের নিজস্ব বিশ্বাস ও ‘মিল্লাত’ থাকতে পারেঃ
“নিশ্চয়ই আমি পরিত্যাগ করেছি সেই কওমের মিল্লাতকে যারা আল্লাহর উপর ঈমান আনেনি।” (১২: ৩৭)
কোন কওমের একটি মিল্লাত বা নির্দিষ্ট জীবন-পদ্ধতি থাকতে পারে, পক্ষান্তরে, একটি কওমের মিল্লাত কোথাও প্রয়োগ করা হয়নি এমনও হতে পারে। যে-সব লোক বিভিন্ন কওম ও মিল্লাত বর্জন করে হযরত ইব্রাহিমের (আঃ) মিল্লাতকে গ্রহণ করেছে তাদের ক্ষেত্রে আল্লাহ তা’আলা প্রয়োগ করেন ‘মিল্লাত’ শব্দটি, ‘কওম’ নয়।
উপরে আমি যা’ বলেছি, তার অর্থ হচ্ছে এই যে, আমি যতোটা বুঝতে সক্ষম হয়েছি তাতে কুরআন মজীদে মুসলমানদের ক্ষেত্রে ‘উম্মত’ ব্যতীত অপর কোনো শব্দ ব্যবহার করা হয়নি। যদি এর ব্যতিক্রম হয়ে থাকে আমি তা জানতে পারলে খুবই খুশী হবো। ‘কওম’ বলতে বুঝায় এক দল মানুষ এবং এ ধরনের মনুষ্যদল হাজার জায়গায় হাজার রকমে গোষ্ঠী, জাতি, বর্ণ, ভাষা, দেশ ও নৈতিক অনুশাসনের বুনিয়াদে অস্তিত্বে আসতে পারে। পক্ষান্তরে, মিল্লাত’ বিভিন্ন দলের ভিতর থেকে গ’ড়ে তুলবে একটি নতুন ও সাধারণ দল ।অন্য কথায় ‘মিল্লাত’ অথবা উম্মত” জাতিসমূহকে আপনার মধ্যে টেনে আনে কিন্তু তাদের মধ্যে আত্মবিলোপ করে না।আজকের দিনের পরিস্থিতি বর্তমান ওলামা সম্প্রদায়কে এমন ধারায় কথা বলতে ও কুরাআন শরীফের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করতে বাধ্য করেছে যা” কথনাে নবী করীম (দঃ)-এর ও কুরআন শরীফের উদ্দেশ্য হ’তে পারে না। কে না জানে যে, হযরত ইব্রাহিম (আঃ) ছিলেন প্রথম নবী যাঁর প্রাপ্ত ওহী জাতি, বংশ ও দেশের সকল বৈষম্য মুছে ফেলেছিলো? মানবজাতি বিভক্ত হয়েছিলো । মাত্র দু’ টি শ্রেণীতেঃ তওহীদপন্থী ও বহুত্ববাদী। তথন থেকে শুরু করে দুনিয়ায় রয়েছে মাত্র দু’টি উম্মত; আর কোনাে তৃতীয় উম্মত নয়। কাবার ওয়ালী যারা তারাই আজ উপেক্ষা করছে ইব্রাহিম ও ইসমাইলের দাওয়াত। জাতীয়তাবাদের বহিরাবরণ যারা পরিধান করেছেন মিল্লাত প্রতিষ্ঠাতাদের মুনাজাত সম্পর্কে তাঁরা চিন্তাও করেন না, যে-মুনাজাত কাবার বুনিয়াদ স্থাপন করে উচ্চারণ করেছিলেন আল্লাহর দুই নবীঃ
“এবং যখন ইব্রাহিম ও ইসমাইল সেই গৃহের (কাবার) বুনিয়াদ তুলছিলেন, (ইব্রাহিম মুনাজাত করলেন ) আমাদের রব ! আমাদের কাছ থেকে (এ কাজ) তুমি কবুল করো, তুমি-একমাত্র তুমিই শ্রবণকারী ও সর্বজ্ঞ। আমাদের রব ! আমাদেরকে করে দাও তোমারই কাছে সমর্পিতচিত্ত এবং আমাদের বংশধরদের ভিতর থেকে করে দাও একটি উম্মত তোমারই কাছে সমর্পিতচিত্ত।” (২:১২৭-১২৮)
আল্লাহর দরবার থেকে উম্মতি মুসলিমাহ বলে আখ্যায়িত হবার পর আরবী ,ইরানী,আফগানী ,ইংরেজ, মিসরীয় অথবা ভারতীয় জাতীয়তার মধ্যে আমাদের সামাজিক সংগঠনের অংশবিশেষকে অবলুপ্ত করে দেবার আর অবকাশ রয়েছে কি? মুসলিম মিল্লাতের মোকাবিলায় রয়েছে আর একটি মাত্র মিল্লাত যা’ গড়ে উঠেছে সামগ্রিকভাবে সকল অমুসলিমের সমন্বয়ে ।
চলবে ,,,,,,
তর্জমা: সৈয়দ আবদুল মান্নান [1938]